সুখী সংসার গঠনে ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল কর্তৃক প্রণীত শুধুমাত্র ৬ টি (06) মূলনীতি (Affordable) Leave a comment

সুখী সংসার গঠনে স্ত্রীর চেয়ে পুরুষের ভূমিকাই বেশী। নিচে সংসার সুখী করতে ০৬ টি নির্দেশনা দেয়া হলঃ

১। স্ত্রীরা সব সময় স্বামীর মনোযোগ চায়। স্বামী বাসায় যতক্ষণ থাকে ততক্ষণ স্ত্রী চায় স্বামী তাকে নিয়ে ব্যস্ত থাকুক। তার সাথে কথাবার্তা বলুক। তাকে সময়টা পূর্ণ মনোযোগ সহকারে দিক।


২। স্ত্রীরা স্বামীর মুখে বার বার একটি কথা শুনতে চায়়, সেটা হল আমি তোমাকে ভালোবাসি। প্রত্যেক স্বামী তার স্ত্রীকে ভালোবাসে। কিন্তু স্ত্রী এই ভালবাসার ব্যাপারটা বারবার স্বামীর মুখে শুনতে চায় এবং আস্বস্ত থাকতে চায়।স্বামী যদি ভালোবাসার কথা বলে স্ত্রীকে আশ্বস্ত না করে তাহলে তাদের দুজনের মাঝে দুরত্ব বেড়েই চলে। ভালোবাসা কমে যেতে থাকে।

আবূ আয়্যূব আল-আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ চারটি জিনিস নাবীদের চিরাচরিত সুন্নাত। লজ্জা-শরম, সুগন্ধি ব্যবহার, মিসওয়াক করা এবং বিয়ে করা।

যঈফ, মিশকাত (৩৮২), ইরওয়া (৭৫) আর রাদ্দুআলা আল-কাত্তানী পৃঃ ১২।


৩। স্ত্রীরা স্বামীর কঠোরতা পূূর্ণ আচরণ এবং মনোভাব ঘৃণা করে। যে সমস্ত স্বামীরা এলার্জিক অথবা অল্পেই বিরক্ত হয়ে যায় অর্থাৎ ছোটখাট ব্যাপারে ঝামেলা করে, স্ত্রীরা এ সমস্ত স্বামীদের ঘৃণা করে। অপরদিকে স্বামী যদি একেবারেই নির্বিকার হয় অথবা অর্থাৎ এত নরম হয় যে স্ত্রীকে কোন ব্যাপারেই উপদেশ দেয় নাা, তাহলে স্ত্রীরা এধরনের স্বামীকে সুযোগ খাটিয়ে নিজের স্বার্থ উদ্ধার করে। কাজেই স্বামীকে এই কঠোরতা ও অনমনীয়তা এ দুইয়ের মাঝামাঝি একটি অবস্থান গ্রহণ করতে হবে।

৪। স্বামী স্ত্রীদের ক্ষেত্রে যা পছন্দ করে বা যা চায়, স্ত্রী ও স্বামী হতে সেটা চায় এবং তা পেতে পছন্দ করে। স্বামী ভালো কাপড় পড়বে, ভালো ভালো কথা বলবে, দেখতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকবে, সুন্দর সুবাস তার কাছ থেকে আসবে, এসবই স্ত্রীরা স্বাম থেকে পেতে চায়।

কোন এক সময় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে আমরা বের হলাম। আমরা ছিলাম যুবক। (বিয়ের খরচ বহনের) আমাদের আর্থিক সামর্থ্য ছিল না। তিনি বললেনঃ হে যুব সমাজ। তোমাদের বিয়ে করা উচিত। কেননা, এটা দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং লজ্জাস্থানকে সুরক্ষিত রাখে। আর তোমাদের যে লোকের বিয়ের সামর্থ্য নেই সে লোক যেন রোযা আদায় করে। কেননা, তার যৌনশক্তিকে এটা নিয়ন্ত্রণে রাখবে।

সহীহ্ , ইবনু মা-জাহ (১৮৪৫), বুখারী, মুসলিম


৫। স্ত্রী তার ঘরের রানী। স্ত্রী তাঁর ঘরের উপর নিজেকে অধিপতি হিসেবে ভাবে। তার ঘর যত ছোটই হোক না কেন সেটি তার রাজত্ব। কাজেই স্বামীর কখনই উচিত না স্ত্রীকে তার রাজত্ব থেকে দূরে সরিয়ে ফেলা অথবা তার রাজত্ব ধ্বংস করা। যখনই স্বামী তার স্ত্রীর কাছ থেকে তার ঘরের মালিকানা কেড়ে নেয় তখন স্ত্রীর কাছে মনে হয় সে যেন তার রাজত্ব হারিয়েছে।

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা যে ব্যক্তির দীনদারী ও নৈতিক চরিত্রে সন্তুষ্ট আছ তোমাদের নিকট সে ব্যক্তি বিয়ের প্রস্তাব করলে তবে তার সাথে বিয়ে দাও। তা যদি না কর তাহলে পৃথিবীতে ফিতনা-ফ্যাসাদ ও চরম বিপর্যয় সৃষ্টি হবে। হাসান সহীহ, ইরওয়া (১৮৬৮), সহীহাহ (১০২২), মিশকাত (২৫৭৯)

৬। স্ত্রী তার স্বামীকে খুব ভালোবাসে। তার স্বামীর জন্য তার বাবার ঘর ছেড়ে চলে আসে। সে তার স্বামীকে যেমনি ভালোবাসে তেমনি ভালবাসে তার পিত্রালয় কে। কোনটাই সে ছেড়ে দিতে চায় না, কোনটাই হারাতে চায় না। কাজেই স্বামীর কখনই উচিত হবে না একই পাল্লায় তাকে এবং তার স্ত্রীর পিতা-মাতা বা শ্বশুরবাড়ি কে স্থাপন করা। কারণ যখনই স্বামী তাকে এবং তার স্ত্রীর পরিবারকে একই পাল্লায় রাখবে, তখন স্ত্রীকে যেকোন একটাকে বেছে নিতে হবে। সে যদি তার নিজের পিত্রালয় এর উপরে স্বামীকে প্রাধান্য দেয় তাহলে সে মনোকষ্টে থাকবে।

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার বাসর রাতের সকালে আমার ঘরে এলেন। আমার কাছে তুমি (খালিদ ইবনু যাকওয়ান) যেভাবে বসে আছ, তিনি আমার বিছানায় ঠিক সেভাবে বসলেন। আমাদের বালিকারা এমন সময়ে দফ বাজিয়ে বদরের যুদ্ধের শহীদ হওয়া আমার বাপ-দাদার শোকগাঁথা গাইছিলো। তাদের কোন একজন গাইতে গাইতে বলল, “আমাদের মাঝে একজন নবী আছেন। আগামী কাল কি হবে তা তিনি জানেন।” তিনি (রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)) তাকে বললেনঃ “এরূপ বলা হতে বিরত থাক, বরং তাই বল এতক্ষণ যা বলতেছিলে”। সহীহ, আল আদাব (৯৪)

শেয়ার করে অন্য জনকে এই লেখাটি পড়ে উপকৃত হবার সুযোগ দিন। সদকায়ে জারিয়ার সুযোগ গ্রহণ করুন। আল্লাহ আমাদের কবুল করুন।

আরো পড়ুন…… অথবা অন্য ওয়েবসাইট ভিজিট করতে ক্লিক করুন……

সুখী সংসার বিষয়ে আরো পড়তে বই কিনে পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

SHOPPING CART

close