শয়তানের ধোঁকাঃ বাড়াবাড়ি এবং ছাড়াছাড়ি (মূলঃ ইবনুল ক্বাইয়িম) Leave a comment




আল্লাহতাআলা আমাদের যে আদেশ দিয়েছেন তাঁর প্রত্যেকটার ব্যাপারে শয়তান দুইভাবে অবস্থান নিয়ে থাকে। হয় সে আদেশ পালনে শয়তান চরম্পন্থা অবলম্বনের কুমন্ত্রনা দেয়, না হয় শিথীলতার নির্দেশ দেয়। সেই এই দুই ধরনের কৌশল অবলম্বন করেই আল্লাহর বান্দাদের উপর জয়ী হয়ে যায়।  

শয়তান প্রত্যেক বান্দার অন্তরে প্রবেশ করে খুব ভালোভাবে সেটাকে যাচাই বাছাই করে। অতঃপর সে যদি, মানুষের অন্তরে ঔদাসীন্যের চিহ্ন পায়, তাহলে সেদিক থেকে শয়তান সু্যোগ নেয়ার চেষ্টা করে। তাকে আলস্য, ঔদাসীন্য এবং জড়তা সৃষ্টির মাধ্যমে আঘাত করে। শয়তান সেই ব্যক্তির সামনে দ্বীনকে আলস্য, ছাড়াছাড়ি, মিথ্যা আশা ইত্যাদি দিয়ে সাজিয়ে পেশ করে। ফলে মানুষ তাঁর উপর মহান আল্লাহপাক যা আদেশ করেছেন, তা পালনে ব্যর্থ হয়ে যায়। সে ভাবে দ্বীনে এ ব্যাপারে ছাড় দেয়া হয়েছে, অথচ সে ব্যাপারে দ্বীন তাকে ছাড় দেয়নি।

অপরদিকে, শয়তান যদি আল্লাহর বান্দার অন্তর একাগ্রচিত্ত, নিবিষ্ট, আন্তরিক  এবং নিবেদিত হিসেবে পায়, তাহলে সে সেই বান্দাকে উপরোক্ত উপায়ে ধোঁকা দেয়া থেকে নিরাশ হয়ে যায়। কিন্তু তখন শয়তান অন্য উপায় অবলম্বন করে। শয়তান বান্দাকে বাড়াবাড়ির নির্দেশ দেয়।  শয়তান তাকে বোঝায় যে, সে যা করছে তা যথেষ্ট নয়। 

অন্যেরা যে আমল করে যাচ্ছে, সেই আমল তাঁর জন্য যথেষ্ট নয়। অন্যেরা যখন স্বাভাবিক নিয়মে সুন্নাহ অনুসারে ঘুমায় তখন সে ঘুমায় না, অন্যেরা যখন সিয়াম ভাঙ্গে তখন সে সিয়াম রাখে, এমনকি অযুতে যেখানে তিনবার ধোয়া সুন্নত সেখানে সে সাতবার ধোয়াকে সঠিক মনে করে। 

যেখানে নামায সংক্ষিপ্ত করার বিধান আছে, সেখানে সে সংক্ষিপ্ত করাকে বেঠিক মনে করে। এভাবে প্রতিটা ক্ষেত্রে সে বাড়াবাড়ি করে। এভাবে শয়তান তাকে সহজ সরল পথ থেকে বিভ্রান্ত করে দূরে সরিয়ে নিয়ে যায়।   
   
দুইক্ষেত্রেই শয়তানের উদ্দেশ্য একঃ তাহলো আল্লাহর কাছ থেকে বান্দাকে দূরে টেনে নিয়ে যাওয়া। একটা হলো আল্লাহর আদেশ পালনে শৈথীল্য করানো, অপরটি হলো আল্লাহ যা আদেশ করেছেন তার অতিরিক্ত করা। 

যুগে যুগে অনেক মানুষই এই দুটির যে কোন একটি উপায়ে ধোকায় পড়েছে এবং সরল পথ থেকে দূরে সরে গেছে। এখন প্রশ্ন হল, এ থেকে রক্ষার উপায় কি। 

এ থেকে রক্ষার একমাত্র উপায় হল, মহান আল্লাহপাকের কাছে বিনয়াবত হয়ে দুয়া করা, দ্বীনের সুগভীর জ্ঞান অর্জনে লিপ্ত থাকা, সবসময় শয়তানের ব্যাপারে মানসিকভাবে সতর্ক থাকা এবং যে কোন বিষয়ে মধ্যপন্থা অবলম্বন করা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

SHOPPING CART

close