মায়ের দুয়ার বরকতে ছেলে বড় দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে গেল Leave a comment

সৌদি আরবের ব্যস্ত হাই ওয়ে। সাঁ সাঁ করে গাড়ী চলছে। সবচেয়ে কম যে স্পিডে গাড়ি চলছে তা হল ১২০ কিমি প্রতি ঘন্টায়। এক যুবক তার গাড়ী নিয়ে জেদ্দার দিকে যাচ্ছে। ড্রাইভিং শিখেছে বেশী দিন হয়নি। এখনও পুরোপুরী ড্রাইভিং এ পাকা হয়ে উঠেনি।  ফলে যা হবার তাই হল। মোড় নেয়ার সময় সামনের এক মালবাহী ট্রাকের সাথে মুখোমুখী সঙ্ঘর্ষ। গাড়ীটি কিছু বুঝে উঠতে না উঠতেই একেবারে ট্রাকের তলায় পুরোপুরী ঢুকে গেল। সাথে সাথে গাড়ির তেলের ট্যাঙ্ক ফেটে গিয়ে পুরো গাড়িতে আগুন ধরে গেল।
আশেপাশে যেকজন লোক ছিল, তাদের সামনেই ঘটনা ঘটে, কিন্তু কারোর কিছুই করার নেই। গাড়িটার বিন্দু মাত্র অংশ অক্ষত নেই। পুরোটাই পুরে ছাই হয়ে গিয়েছে। গাড়ির ভিতরে যারাই থাকুক, তাদের বেঁচে থাকার কোন সম্ভাবনাই নেই। তারপর ও কিছু সাহসী যুবক গাড়ির কাছে গেল যদি বেঁচে থাকা কাউকে পাওয়া যায়! হাসপাতালে নিলে বাঁচতে ও তো পারে।
ভিড়ের মধ্যে হঠাত মানুষের মুখে মুখে তাকবীর ও তাহলীল উচ্চারিত হচ্ছে। সেটা শুনে শুনে অন্যরাও বুঝে বা না বুঝে “আল্লাহু আকবর, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু” বলছে। কিছুক্ষণ পরেই কারণটা পরিস্কার হয়ে গেল সবার কাছে। পুরো গাড়ি পুড়ে ছাই হলেও, গাড়ির ভিতরে যুবক যাত্রীটি সম্পূর্ণ অক্ষত আছেন। গায়ে কোন আঘাতের লেশ মাত্র ও নেই। ব্যাপারটা অকল্পনীয়। যুবক নিজেও হতভম্ব। একটু আগে যা ঘটে গেল সেটা যেন স্বপ্নের মত।
ভিড় থেকে একজন ব্যক্তি হেটে যুবকের কাছে এসে বলল,
“ভাই, যা ঘটেছে তা আল্লাহ তাআলার বিশেষ অনুগ্রহ। বলেন ভাই, আপনি কী আমল করেছেন যার ফলে আল্লাহ আপনাকে হেফাযত করেছেন। নিশ্চয় আপনি এমন কিছু করেছেন যা আল্লাহকে সন্তুষ্ট করেছে।”
যুবক উত্তরে বলল,
“আমি জেদ্দায় চাকরী করি। এটা আমার প্রথম চাকরী। মাস শেষে আমি বেতন পেয়ে আমার মায়ের কাছে ছুটে যাই। আমার মা রাবিগে থাকেন। আমি সেখানে গিয়ে আমার মায়ের কাছে আমার বেতনের পুরো টাকাটাই হাতে তুলে দেই। তিনি এতে অনেক খুশী হন। তিনি যে এত খুশী হবেন, আমি ভাবতেও পারিনি। তিনি খুশী খুশী মনে তখনই আমার জন্য হাত তুলে দুয়া করেন, ‘হে আল্লাহ! আমার ছেলেকে আপনি সমস্ত বিপদ আপদ থেকে হেফাযতে রাখেন, নিরাপদে রাখেন।’ আমার ধারণা, আল্লাহপাক আমার এই মায়ের সন্তুষ্টির কারণে আমার মায়ের দুয়া কবুল করে নিয়েছেন আর আমাকে হেফাযত করেছেন এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা হতে। ” 
সন্তানের জন্য পিতামাতার দুয়া সরাসরি কবুল হয়। কিন্তু আজ এমন অবস্থা, বাবা মায়েরা সন্তানের ভাল চান ঠিকই, কিন্তু দুয়া করেন না। অথচ দুয়া করলে সন্তানেরই লাভ। কখনও আপনার সন্তানের প্রতি যদি আপনি মন থেকে খুশী হয়েছেন মনে হয়, তখন ‘সাব্বাশ’ ‘ভেরি গুড’ না বলে বরং সাথে সাথে হাত তুলে দুয়া করে দিবেন। ইনশাল্লাহ আপনার সন্তান কামিয়াব হয়ে যাবে।
                                                                                                             (সাআতাও ওয়া সাআহ, পৃঃ ১৫৬)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

SHOPPING CART

close