ইসলাম এসেছে মানুষের জীবনকে সহজ করার জন্য কঠিন করার জন্য নয়। বুখারী শরীফে এসেছে মহান আল্লাহ ও রাসূল সাল্লাহু সাল্লাম কে বলছেন, আপনাকে পাঠানো হয়েছে সহজ করার জন্য কঠিন করার জন্য নয়।
সুন্দর হাদিস টি আমাদেরকে বলছে যে, আমাদের জীবনকে সহজ করার জন্য ইসলামের আবির্ভাব কঠিন করার জন্য নয়। কাজেই কোনো ভাবেই আমাদের জীবনকে ইসলামের নামে কঠিন করা উচিত হবে না।
জীবনে আমাদের নিজেদের যত্ন নেয়া একটা অত্যাবশ্যক বিষয়। নিজের যত্ন নেয়ার প্রথম ধাপই হচ্ছে আপনি কখন সমস্যা দ্বারা ভারাক্রান্ত হয়ে যাচ্ছেন সেটা খেয়াল করা। নিজের অনুভুতি কে উপেক্ষা করলে তা সমস্যার সৃষ্টি করে। তাই stress হওয়ার যেকোনো symptom দেখার সাথে সাথেই সেখান থেকে উত্তরণের উপায় আপনাকে খুঁজতে হবে আগে।
“…আল্লাহ তোমাদেরকে অসুবিধায় ফেলতে চান না; কিন্তু তোমাদেরকে পবিত্র রাখতে চান এবং তোমাদের প্রতি স্বীয় নেয়ামত পূর্ণ করতে চান-যাতে তোমরা কৃতজ্ঞাতা প্রকাশ কর।” (কুরআন ৫:৬)
“…আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান; তোমাদের জন্য জটিলতা কামনা করেন না যাতে তোমরা গণনা পূরণ কর এবং তোমাদের হেদায়েত দান করার দরুন আল্লাহ তা’আলার মহত্ত্ব বর্ণনা কর, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর।” (কুরআন ২ঃ১৮৫)
“…আল্লাহ কোন জাতির অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যে পর্যন্ত না তারা তাদের নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করে। ” (কুরআন ১৩:১১)
Stress কমানোর জন্য চেষ্টা শুরু করুন:
যেকোনো পরিস্থিতিতেই নিজেকে শান্ত রাখুন। নিজেকে শান্ত রাখার প্রশিক্ষণ দিন। কারণ বিপদে পরলে শান্ত থাকলেই সহজে একটি সমাধান বের করা যায়। অস্থির চিত্তে কখনোই ভালো সমাধান পাওয়া সম্ভব নয়। কখনো রাগ করবেন না। রাগ কোন সমস্যার সমাধান তো করেই না বরং আরো খারাপ করে দেয়।
একবার এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বললেন আমাকে উপদেশ দিন। রাসুল সাঃ তাকে বললেন, রাগ করোনা। লোকটি আবার উপদেশ চাইলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন রাগ করোনা। বুখারী।
ধৈর্যশীল এবং শোকরগুজার হওয়া।
ধৈর্য এবং শোকর একজন ঈমানদারের জীবনে অপরিহার্য বিষয়। আমরা যদি আমাদের জীবনে মহান আল্লাহ পাকের নেয়ামত গুনতে শুরু করি গুনে শেষ করা যাবে না। চারিদিকে লক্ষ্য করলেই আমরা দেখতে পাব মহান আল্লাহপাক আমাদেরকে অনেকের চেয়ে ভালো রেখেছেন।
সমস্যার সমাধানে চেষ্টা করতে থাকুন
জীবনে সমস্যা আসবেই। সমস্যা আসলে তার সমাধানের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হবে। এজন্য সেই সাথে মহান আল্লাহপাকের কাছে সাহায্য চাইতে হবে। তাহলে দেখবেন আপনি সাহস হারাচ্ছেন না বরং নিজের আত্মবিশ্বাস ফিরে পাচ্ছেন।
নিজের খাদ্যাভ্যাসের দিকে লক্ষ্য করুন
একটু সময়ের জন্য হলেও চিন্তা করুন যে আপনি কী খাচ্ছেন? আপনি কি জানেন আপনার খাবার আপনার মনের উপর প্রভাব ফেলতে পারে! কয়েকদিন খুব সাবধানে লক্ষ্য করুন কোন খাবার খেলে তা আপনার মনের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।
নিজেকে নিজের সীমাবদ্ধতা সহ ভালোবাসতে শিখুন।
আমরা সবাই মানুষ তাই মানুষ হিসেবে আমাদের কিছু কিছু ব্যাপারে সীমাবদ্ধতা থাকবেই। সীমাবদ্ধতা থাকে না শুধু মহামানবের। প্রত্যেক ব্যক্তি অনন্য। কাজেই একজনের সাথে আরেকজনের পার্থক্য থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কেউ কোন কাজ করতে পারলে সেটা যে আপনিও পারবেন তা কিন্তু নয়।
বিপদ আপদ জীবনের একটি স্বাভাবিক অংশ হিসেবে মনে করা
বিপদ যে জীবনেরই অংশ এটা মনে করা এবং মেনে নেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। দুনিয়ার জীবনে বিপদ-আপদ আসবে এটাই স্বাভাবিক। তাই বিপদ-আপদ আল্লাহর পক্ষ থেকেই আসে এবং তকদির অনুযায়ী আসে এটা মেনে নিয়ে চলাই একটা সুখী জীবনের জন্য অপরিহার্য।
এবং অবশ্যই আমি তোমাদিগকে পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, মাল ও জানের ক্ষতি ও ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে। তবে সুসংবাদ দাও সবরকারীদের। যখন তারা বিপদে পতিত হয়, তখন বলে, নিশ্চয় আমরা সবাই আল্লাহর জন্য এবং আমরা সবাই তাঁরই সান্নিধ্যে ফিরে যাবো।তারা সে সমস্ত লোক, যাদের প্রতি আল্লাহর অফুরন্ত অনুগ্রহ ও রহমত রয়েছে এবং এসব লোকই হেদায়েত প্রাপ্ত। (কুরআন , ২ঃ১৫৫-১৫৭)