কেন দুশ্চিন্তায় মানুষ এত হতাশ হয়ে যায়। Strong 1 reason Only Leave a comment

ইব্রাহিম আদহাম (রহঃ) এর উপদেশ

ইব্রাহিম আদহাম (রহঃ) একবার এক দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মানুষের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। দুশ্চিন্তাগ্রস্ত লোকটির অবস্থা দেখে তিনি সেই ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে বললেন যে, আমি তোমাকে তিনটি প্রশ্ন করব, তুমি উত্তর দিবে। এই দুনিয়ায় আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া কোন কিছু হয় কি? তোমার জন্য আল্লাহ তাআলা যে রিযিক নির্ধারণ করে রেখেছেন তার থেকে কি একটু কমবে? তোমার জন্য আল্লাহ তাআলা যে হায়াত নির্ধারণ করে রেখেছেন তার থেকেও একটুও কমবে কি?

লোকটি উত্তরে বলল, না।

তখন ইব্রাহিম আদহাম রাহমাতুল্লাহ বললেন, তাহলে এত দুশ্চিন্তা কিসের জন্য।
নিশ্চয়ই দুশ্চিন্তা আল্লাহর একটি বাহিনী যার মাধ্যমে তিনি তাঁর বান্দাকে পরীক্ষা করেন। যাতে তিনি দেখেন তার বান্দা এই দুশ্চি ন্তায় কি করে? এই দুশ্চিন্তা যদিও অনুভূতিজাত, বস্তুজাত নয়; তবুও তা বস্তুজাত কষ্ট থেকেও বেশি প্রভাবশালী।

এই কথাকে হযরত আলী ইবনে আবু তালিব রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু অন্যভাবে বলেছেন।

হযরত আলী ইবনে আবু তালিব রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুর বক্তব্য

হযরত আলী ইবনে আবু তালিব রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন, যখন তাকে প্রশ্ন করা হয়, আল্লাহর সবচেয়ে শক্তিশালী বাহিনী কোনটি? তিনি বললেনঃ পাহাড়! কিন্তু লোহা পাহাড় কেটে ফেলে। অতএব লোহা পাহাড়ের চেয়ে শক্তিশালী। আগুন লোহাকে গলিয়ে দেয়। কাজেই আগুন লোহার চেয়ে শক্তিশালী। পানি আগুন নিভিয়ে ফেলে। অতএব পানি আগুনের চেয়ে শক্তিশালী।

মেঘ পানিকে বহন করে। অতএব মেঘ পানির চেয়ে শক্তিশালী। বাতাস মেঘকে চালিয়ে নিয়ে যায়। মানুষ সেই বাতাসকে হাত ও কাপড় দিয়ে আটকে দেয়। অতএব মানুষ বাতাসের চেয়ে শক্তিশালী। মানুষ কে পরাভূত করে ঘুম। অতএব ঘুম মানুষের চেয়ে শক্তিশালী। আর দুশ্চিন্তা! হায় দুশ্চিন্তা! দুশ্চিন্তা ঘুমকে দূর করে দেয়।

অতএব আল্লাহর সবচেয়ে শক্তিশালী বাহিনী হচ্ছে দুশ্চিন্তা। তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার উপর ইচ্ছা তিনি তা চাপিয়ে দেন। আল্লাহতায়ালা সত্য বলেছেন

অতঃপর আল্লাহ যাকে পথ-প্রদর্শন করতে চান, তার বক্ষকে ইসলামের জন্যে উম্মুক্ত করে দেন এবং যাকে বিপথগামী করতে চান, তার বক্ষকে সংকীর্ণ অত্যধিক সংকীর্ণ করে দেন-যেন সে সবেগে আকাশে আরোহণ করছে। এমনি ভাবে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে না। আল্লাহ তাদের উপর আযাব বর্ষন করেন।

সুরা আন-আমঃ ১২৫

দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি লাভের দুয়া

দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি লাভের জন্য রাসুল (সাঃ) নিচের দুয়াটি শিখিয়েছেন। দুয়াটি খুবই কার্যকরী।

বুখারী -৬৩৬৯

শাদ্দাদ ইবনু আউস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ সাইয়্যিদুল ইস্তিগফার হলো বান্দার এ দু’আ পড়া- “হে আল্লাহ! তুমি আমার প্রতিপালক। তুমিই আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমারই গোলাম। আমি যথাসাধ্য তোমার সঙ্গে কৃত প্রতিজ্ঞা ও অঙ্গীকারের উপর আছি। আমি আমার সব কৃতকর্মের কুফল থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি। তুমি আমার প্রতি তোমার যে নি’য়ামত দিয়েছ তা স্বীকার করছি। আর আমার কৃত গুনাহের কথাও স্বীকার করছি। তুমি আমাকে ক্ষমা কর।” যে ব্যক্তি দিনে (সকালে) দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে এ ইসতিগফার পড়বে আর সন্ধ্যা হবার আগেই সে মারা যাবে, সে জান্নাতী হবে। আর যে ব্যক্তি রাতে (প্রথম ভাগে) দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে এ দু’আ পড়ে নেবে আর সে ভোর হবার আগেই মারা যাবে সে জান্নাতী হবে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৬১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৫৪)

bukharI-৬৩০৬

আবদুল্লাহ ইবনু মাস’উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ ইবনু মাস’উদ (রাঃ) দু’টি হাদীস বর্ণনা করেছেন। একটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে আর অন্যটি তাঁর নিজ থেকে। তিনি বলেন, ঈমানদার ব্যক্তি তার গুনাহগুলোকে এত বিরাট মনে করে, যেন সে একটা পর্বতের নীচে উপবিষ্ট আছে, আর সে আশঙ্কা করছে যে, সম্ভবত পর্বতটা তার উপর ধ্বসে পড়বে। আর পাপিষ্ঠ ব্যক্তি তার গুনাহগুলোকে মাছির মত মনে করে, যা তার নাকে বসে চলে যায়। এ কথাটি আবূ শিহাব নিজ নাকে হাত দিয়ে দেখিয়ে বলেন। তারপর [নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হতে বর্ণিত হাদীসটি বর্ণনা করে বলেন] নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ মনে কর কোন এক ব্যক্তি (সফরের) কোন এক স্থানে অবতরণ করলো, সেখানে প্রাণেরও ভয় ছিল। তার সঙ্গে তার সফরের বাহন ছিল। যার উপর তার খাদ্য ও পানীয় ছিল, সে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লো এবং জেগে দেখলো তার বাহন চলে গেছে। তখন সে গরমে ও পিপাসায় কাতর হয়ে পড়লো। রাবী বলেনঃ আল্লাহ যা চাইলেন তা হলো। তখন সে বললো যে, আমি যে স্থানে ছিলাম সেখানেই ফিরে যাই। এরপর সে নিজ স্থানে ফিরে এসে আবার ঘুমিয়ে পড়লো। তারপর জেগে দেখলো যে, তার বাহনটি তার পাশেই দাঁড়িয়ে আছে। তখন সে ব্যক্তি যতটা খুশি হলো, নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা তাঁর বান্দার তাওবাহ করার কারণে এর চেয়েও অনেক অধিক খুশি হন। আবূ আওয়ানাহ ও জারীর আ’মাশ (রহঃ) থেকে এ রকমই বর্ণনা করেছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৬৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৫৬)

বুখারী-৬৩০৮

Please visit this link to buy honey

Read More মুসলমানদের ১৫ টি প্রশংসনীয় চারিত্রিক গুণাবলী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

SHOPPING CART

close