অন্তরের রোগ এর চিকিৎসা যে পাঁচটি উপায় করবেন Leave a comment

অন্তরের রোগ। মানুষের অন্তর রোগাক্রান্ত হয়ে থাকে। এই রোগাক্রান্ত অন্তরের চিকিৎসা করাতে হয়। কোরআন ও হাদিসে এবং আমাদের পূর্বসূরী আলেমরা রোগাক্রান্ত অন্তরের চিকিৎসা বিভিন্ন উপায় বাতলে দিয়েছেন। রোগাক্রান্ত তার চিকিৎসা করা হয় তা বর্ণনা করা হলো:

১। অর্থ সহকারে কুরআন তেলাওয়াত করা:

কোরআনের মধ্যে শেফা রয়েছে। আত্মিক শেফা এবং শারীরিক শেফা দুটোই। বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত এর ফলে অন্তর পরিশুদ্ধ হয়। গুনাহ করতে করতে মানুষের অন্তরের মরিচা ধরে যেমনি মরিচা ধরে লোহায়। কোরআন তেলাওয়াত এবং তার অর্থ নিয়ে চিন্তাভাবনা করার মাধ্যমে এই মরিচা দূর হয় এবং অন্তর পরিশুদ্ধ হয়।

হে মানবকুল, তোমাদের কাছে উপদেশবানী এসেছে তোমাদের পরওয়ারদেগারের পক্ষ থেকে এবং অন্তরের রোগের নিরাময়, হেদায়েত ও রহমত মুসলমানদের জন্য।

কুরআন-১০ঃ৫৭

২। পেট ভরে খাবার না খাওয়া:

খাবার সাথে মানুষের নাম এবং অন্তরের এক বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। যে উদরপূর্তি করে খায় তার নফস তার উপর আধিপত্য বিস্তার করতে পারে সহজেই। এজন্য ইসলামে পেট পুরে খাওয়াকে অপছন্দ করা হয়েছে। কোরআন শরীফে আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন:

আর যারা কাফের, তারা ভোগ-বিলাসে মত্ত থাকে এবং চতুস্পদ জন্তুর মত আহার করে। তাদের বাসস্থান জাহান্নাম।

কুরআন-৪৭ঃ১২

হাদীছ শরীফে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেন

আদম সন্তান যত পাত্র ভরে তাঁর মধ্যে নিকৃষ্ট পাত্র হল পেট। আদম সন্তানের জন্য তাঁর কোমর সোজা করে রাখার মতো খাদ্যই যথেষ্ট। আর যদি এর চেয়ে বেশী প্রয়োজন হয় তাহলে সে যখন খাবে, তখন পেটের এক তৃতীয়াংশ খাদ্য, এক তৃতীয়াংশ পানি এবং এক তৃতীয়াংশ খালি রাখবে। 

( তিরমিযী)

কাজেই খাবার খেলে সুন্নাহ মোতাবেক খাওয়া এবং সুন্নাহ মোতাবেক রোজা, সিয়াম পালন করা অন্তরের পরিশুদ্ধির কারণ।

৩। তাহাজ্জুদ অথবা কিয়ামুল লাইল আদায় করা:

হাদীসে কুদসীতে রাসুল (সাঃ) বলেন,

আমাদের প্রভু পরওয়ারদিগার তাবারাকা ওয়া তা’আলা প্রত্যেক রাত্রে দুনিয়ার আসমানে (যা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়) নেমে আসেন যখন রাত্রের এক তৃতীয়াংশ বাকী থাকে । অতঃপর তিনি বলেন, তোমাদের কে আমাকে ডাকবে! আমি তার ডাকে সাড়া দেব । কে আমার কাছে কিছু চাইবে আমি তাকে তা দেব, কে আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে আমি তাকে ক্ষমা করে দেব

(মুসলিম, মেশকাত ১০৯ পৃঃ)

যখন সমগ্র বিশ্ববাসী ঘুমিয়ে পড়ে তখন যদি কোন বান্দা নিদ্রা থেকে উঠে তাহাজ্জুদ কিয়ামুল লাইল আদায় করে তাহলে তা তার জন্য অত্যন্ত বরকতময় হয়ে যায়। নফসকে আয়ত্তে রাখতে কিয়ামুল লাইলের মত অন্য কোন আমল নেই।

https://www.musafiron.com/product/%e0%a6%95%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a7%81%e0%a6%b2-%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%87%e0%a6%b2/

৪। সেহরির সময় কায়মনোবাক্যে আল্লাহর কাছে চাওয়া:

সেহরির সময় টি অত্যন্ত বরকত পূর্ণ এবং মর্যাদাপূর্ণ। তাই সেহেরি খাওয়ার ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম অত্যন্ত গুরুত্ব আরোপ করেছেন। সেহরির সময় টা হচ্ছে কিয়ামুল লাইলের শেষের দিকে এবং ফজর শুরু হওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে, যার কারণে এ সময়ে আল্লাহ সুবহানাতায়ালা বান্দাকে জিজ্ঞেস করতে থাকেন যে, বান্দার কী প্রয়োজন? কাজেই সেহেরির সময় কায়মনোবাক্যে এবং খুব আবেগ নিয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করা চাই, যেন আল্লাহ তায়ালা অন্তরসমূহ পরিশুদ্ধ করে দেন। ইনশাআল্লাহ এর ফলে আত্মা এবং অন্তর পরিশুদ্ধ হবে।

https://www.musafiron.com/product/%e0%a6%85%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%b0%e0%a7%8b%e0%a6%97-%e0%a7%a7%e0%a6%ae-%e0%a6%93-%e0%a7%a8%e0%a7%9f-%e0%a6%96%e0%a6%a3%e0%a7%8d%e0%a6%a1/

৫। নেক লোকদের সোহবতে বা সাহচর্য থাকা:

কোরআন পাকে আল্লাহ সুবহানাতায়ালা এরশাদ করেন

হে ঈমানদারগণ, আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সাথে থাক।

কুরআন-9:119

এ আয়াত দ্বারা বোঝা যায় নেক মানুষের সাহচর্য্যে থাকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। নেক লোকের সাহচর্যে না থাকলে ইলম থাকা সত্ত্বেও আমল করার তৌফিক হয় না। সেই সাথে নিজের আমলের অবস্থাও জানা সম্ভব হয় না। কিন্তু নেক লোকের সাহচর্যে থাকলে নিজের আমল অথবা আখলাকে ঘাটতি থাকলে সেটা সহজেই সেই ব্যক্তির মাধ্যমে জানা যায়। নেক ব্যক্তির সাহচর্য থাকলে নিজের নেক আমল বৃদ্ধির স্পৃহা তৈরি হয়ে থাকে যার ফলে দিন দিন নিজের আমলের উন্নতি হয়। আর ভালো আখলাক সবসময়ই এক ব্যক্তি হতে আরেক ব্যক্তি তে সঞ্চালিত হয়ে থাকে। ভালো আখলাক তখনই মানুষের মধ্যে আসে যখন তার অন্তর পরিশুদ্ধ হয়।

post

Posts not found

কাজেই যে চায় তার অন্তর পরিশুদ্ধ হোক সে উপরের পাঁচটি উপায় অবলম্বন করতে পারে।

0 Comments

    Trackbacks and Pingbacks

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

    SHOPPING CART

    close